আগামী বছরের ২ থেকে ৮ জানুয়ারি দেশে যে ষষ্ট ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’ হবে, তার ক্রয় কাজে কোনো ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এই জনশুমারির প্রস্তাবিত ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মিলনায়তনে প্রকল্প নিয়ে এক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সাড়ে ৩ হাজার কোটি ব্যয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিল পরিসংখ্যান ব্যুরো, যা নিয়ে খোদ পরিকল্পনামন্ত্রীও প্রশ্ন তোলার পর ব্যয় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়।
মান্নান বলেন, “প্রতিটি কাজ আমাদের নিয়ম-নীতি অনুযায়ী করতে হবে। মৌখিক কোনো ব্যাপার নয়, সরকারি বিধি-বিধান ছাপানো আছে। সেগুলো পালন করতে হবে অক্ষরে অক্ষরে।”
ব্যয় কমিয়ে আনার পর এই জনশুমারির জন্য গত ২৯ অক্টোবর ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক।
মন্ত্রী বলেন, “দুর্নীতি সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষ কথা বলে, আমরাও বলি। দুর্নীতি সম্পর্কে আমাদেরকে পদে পদে সাবধান হতে হবে। ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে আমাদের সাবধান হতে হবে। যারা ক্রয়-বিক্রয় করেন, নিয়ম-নীতি অনুযায়ী করবেন, যাতে আমরা সঠিক দরদাম পেতে পারি।”
“কিছু ব্যয় আছে যা না করলেও চলে। এটাকে বলা হয় মিতব্যয়িতা। সেটা সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সময় এবং সম্পদ এই দুটোকে আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করব,” বলেন তিনি।
জনশুমারির কাজের গুরুত্ব তুলে ধরে মান্নান বলেন, “যারা এই কাজের সাথে জড়িত, প্রত্যেকের কাজই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারাই গণনার কাজ করবে, তাদের কাজগুলো সঠিকভাবে মনিটরিং করতে হবে। যাতে এই গণনায় কেউ বাদ না পড়ে।”
কর্মশালায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমরা যেভাবে চাচ্ছি, সেটা আমরা পাচ্ছি না। উন্নয়ন করলে সেটা একটা সিস্টেমে করতে হবে। সিস্টেম অনুযায়ী কাজ না করার ফলে আমাদের কাজগুলো বিশ্বের সামনে ফুটে উঠছে না।
“এখন সব তথ্য একটা ডাটা লিস্টে থাকবে। ফলে এখন আর একই তথ্য বারবার গণনার প্রয়োজন হবে না। তথ্য কালেকশনে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। তথ্য কালেকশনে ভালোভাবে মনিটরিং করতে হবে।” পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বিবিএস জানিয়েছে, খানা তালিকা প্রণয়নের জন্য প্রথমবারের মতো এ শুমারিতে মূল শুমারির আগে লিস্টিং অপারেশন পরিচালনা করা হবে। প্রতিটি খানার জন্য একটি ইউনিক হাউজ-হোল্ড আইডি দেওয়া হবে। এবারই প্রথম মাল্টিমোড (মোবাইল অ্যাপ, ওয়েব অ্যাপ, পিক অ্যান্ড ড্রপ, পেপার বেইজড, কল সেন্টার ইত্যাদি) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো সীমিত আকারে ই-সেন্সাস পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক ও বিদেশে অবস্থানরত অথবা ভ্রমণরত বাংলাদেশি নাগরিকদেরও প্রথমবারের মতো গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
২০২১ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনায় গণনাকারী ও সুপারভাইজারের যোগ্যতা ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক হতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় যুবক ও নারীদের গণনাকারী ও সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। সূত্র : বাংলা নিউজ